সম্প্রতি সোসাল মিডিয়ায় জনপ্রিয়তা পাওয়া আরো একটি পর্যটন স্থান গুলিয়াখালি সি বীচ। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে এর অবস্থান। স্থানীয়দের কাছে এটি মুরাদপুর সৈকত নামেও পরিচিত। সীতাকুণ্ড বাজার থেকে এর দূরত্ব মাত্র ৫ কিলোমিটার। গুলিয়াখালিকে সাজাতে প্রকৃতি যেন কোন কার্পন্য করেনি। এখানে রয়েছে দিগন্তজোড়া সমুদ্রের ঢেউ তোলা জলরাশি আর একদিকে সবুজ কেওড়া বন। বনের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের চারিদিকে রয়েছে কেওড়া গাছের শ্বাসমূল এখানে পাওয়া যাবে সোয়াম্প ফরেস্ট ও ম্যানগ্রোভ বনের মত পরিবেশ। সীতাকুন্ড ভ্রমণের আগের পর্বে আপনাদের শুনিয়েছিলাম বাঁশবাড়িয়া সি-বীচের গল্প।
বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতের অদেখা সৌন্দর্যের খোঁজে
বাঁশবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে আমরা লোকাল বাসে উঠে চলে যাই সীতাকুন্ড বাজার। (বাস ভাড়াঃ ১০ টাকা)। উদ্দেশ্য বহুল প্রত্যাশিত গুলিয়াখালি সী বীচ। সেখানে দেখা হল স্থানীয় এক বন্ধুর সাথে। সীতাকুন্ড থেকে সি এন জি দিয়ে চলে গেলাম গুলিয়াখালি সী বীচ। একটি সি এন জির ভাড়া ছিল ১০০ টাকা (৫ জন যাওয়া যায়)। সকাল ১১ টা নাগাদ পৌছে যাই গুলিয়াখালি সী বীচ কাছে। হাটা শুরু করি বীচের উদ্দেশ্যে। ভয়ে ছিলাম কাদা মারাতে হয় কিনা! ভিডিও তে দেখেছিলাম কিভাবে ট্রাভেলাররা হাটু কাদা মাড়িয়ে সেখানে যায়। আমাদের ভাগ্য ভাল ছিল। বৃষ্টি না হওয়ায় কাদা মারাতে হয়নি। শুকনা ছিল রাস্তা। ৫-৬ মিনিট হেটে চলে পৌছে যাই বহুল প্রত্যাশিত গুলিয়াখালি বীচে। যত সামনে আগাচ্ছিলাম আর মুগ্ধ হচ্ছিলাম সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি দেখে। চারদিকে সবুজের সমারোহ। মাটিতে শ্বাসমূল থাকায় অনেকটা সুন্দরবনের মত মনে হচ্ছিল। খানিকটা হেটে গাছের ছায়ায় শুয়ে পড়লাম। মন চাচ্ছিল সবুজ গালিচায় শুয়ে থাকি লম্বা সময়।
Previous
Next
কয়েকজন মিলে সিদ্বান্ত নিলাম বীচে গোসল করবো। যদিও এই সৈকতটা গোসলের জন্য এত ভাল না। শ্বাস মূল থাকায় হাটতে কষ্ট হয়। আমরা ৪ জন কিছুই তোয়াক্কা না করে নেমে গেলাম সমুদ্রে। বেশ কিছুক্ষন সুমুদ্রে কাটিয়ে উঠে আসলাম। পানি ছিল অসম্ভব রকমের ঠান্ডা। এবার হাল্কা বিশ্রাম নিয়ে ফেরার পালা। সত্যি বলতে আমার এখান থেকে তখনো ফিরতে মন চাচ্ছিল না। মন চাচ্ছিল সন্ধ্যা পর্যন্ত সমুদ্রের পাশে এই সবুজ গালিচায় শুয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের তখন উদ্দেশ্য ছিল বিকেল টা কাটাবো মহামায়া লেকে।
অল্প পরিচিত এই সৈকতে মানুষজনের আনা গোনা কম বলে আপনি পাবেন নিরবিলি পরিবেশ। সাগরের এত ঢেউ বা গর্জন না থাকলেও এই নিরবিলি পরিবেশের গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত আপনার কাছে ধরা দিবে ভিন্ন ভাবেই। চাইলে জেলেদের বোটে সমুদ্রে ঘুরে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে বোট ঠিক করতে দরদাম করে করে নিতে হবে।